এইচএসসি পর্যায়বৃত্ত গতি অনূধাবনমূলক ম্যারাথন

পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে এ প্লাস পাওয়ার জন্য গ ঘ প্রশ্নের পাশাপাশি জ্ঞান এবং অনুধাবনামূলক প্রশ্ন ভালো করা খুবই জরুরী । তোমরা অনেকেই আছো যারা ম্যাথ নিয়ে খুবই এক্সপার্ট হয়ে যাও কিন্তু শেষে দেখা যায় যে তুমি ক খ প্রশ্নের উত্তর করতে পারো না। তোমাদের এই ক খ প্রশ্নের উত্তর করাক সহজ করার জন্য আমাদের আজকের এই পোস্টে পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টার পর্যায়বৃত্ত গতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দেওয়া আছে যা বিগত বছরগুলোতে বোর্ড পরীক্ষাতে এসেছে। প্রশ্ন 01: সরল দোলগতি পর্যাবৃত্ত গতি; কিন্তু পর্যাবৃত্ত গতি সরল দোলগতি নয়—ব্যাখ্যা কর।[DB’22] উত্তর: কোনো বস্তুর গতি যদি নির্দিষ্ট সময় পরপর একই বিন্দুতে ফিরে আসে, তবে সেটি পর্যাবৃত্ত গতি। অন্যদিকে, সরল দোলনগতি হলো সেই গতি যেখানে বস্তুর ত্বরণ তার সরণের সমানুপাতিক এবং ত্বরণ সর্বদা সাম্যবিন্দুর দিকে থাকে। তাই, সরল দোলনগতি সবসময়ই পর্যাবৃত্ত গতি হয়। তবে, সব পর্যাবৃত্ত গতি সরল দোলনগতি নয়, কারণ পর্যাবৃত্ত গতির ক্ষেত্রে বস্তুর ত্বরণ সরণের সমানুপাতিক নাও হতে পারে, যেমন বৃত্তাকার গতি বা তরঙ্গগতির ক্ষেত্রে। প্রশ্ন 02: দোলককে পৃথিবীর কেন্দ্রে নিলে দোলনকালের পরিবর্তন কী হবে?[JB 22; JB’17] উত্তর: দোলককে পৃথিবীর কেন্দ্রে নিলে দোলনকাল অসীম হবে। কারণ, পৃথিবীর কেন্দ্রে অভিকর্ষজ ত্বরণ $$(( g ))$$ শূন্য। আমরা জানি, দোলনকাল $$( T = 2\pi \sqrt{\frac{L}{g}} )$$ , যেখানে ( g = 0 ) হলে, ( T ) অসীম হয়। অর্থাৎ, পৃথিবীর কেন্দ্রে দোলকের দোলনকাল আর নির্ধারণ করা সম্ভব নয়, কারণ এটি কখনোই সম্পূর্ণ হবে না। প্রশ্ন 03: একটি ফাঁপা গোলককে তরল দ্বারা অর্ধপূর্ণ করলে এর পর্যায়কালের উপর কী প্রভাব পড়বে?[Ctg.B’22; RB 17] উত্তর: একটি ফাঁপা গোলককে তরল দ্বারা অর্ধপূর্ণ করলে এর ভরকেন্দ্র কিছুটা নিচে নেমে যায়। সরল দোলকের সূত্রানুসারে, দোলনকাল কার্যকরী দৈর্ঘ্যের বর্গমূলের সমানুপাতিক। ভরকেন্দ্র নিচে নামলে কার্যকরী দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়, ফলে দোলনকালও বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, অর্ধপূর্ণ অবস্থায় গোলকের পর্যায়কাল কিছুটা বৃদ্ধি পাবে। প্রশ্ন 04: সরল দোলনগতি সম্পন্ন কণা যখন সর্বোচ্চ বেগপ্রাপ্ত হয়, তখন ত্বরণ সর্বনিম্ন—ব্যাখ্যা কর।[SB 22] উত্তর: সরল দোলনগতি সম্পন্ন কণা যখন সর্বোচ্চ বেগপ্রাপ্ত হয়, তখন তার সরণ শূন্য হয় এবং ত্বরণও শূন্য হয়। সর্বোচ্চ বেগ পাওয়া যায় সাম্যবিন্দুতে, যেখানে ( x = 0 ) (অর্থাৎ, বস্তুর সরণ শূন্য)। এই অবস্থায় বেগ $$( V_{max} = Aw )$$ , কিন্তু ত্বরণ $$( a = -w^2 \times x = -w^2 \times 0 = 0 )$$ । সুতরাং, বেগ সর্বাধিক হলে ত্বরণ শূন্য হয়। প্রশ্ন 05: শীতকালে দোলক ঘড়ির দোলনকাল কিরূপ হবে?[SB’22; MB 22] উত্তর: শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকার কারণে ঘড়ির দোলকের কার্যকরী দৈর্ঘ্য সামান্য কমে যায়। সরল দোলকের দোলনকাল $$( T = 2\pi \sqrt{\frac{L}{g}} )$$ , যেখানে ( L ) হলো দোলকের দৈর্ঘ্য। দৈর্ঘ্য কমে গেলে দোলনকালও কমে যায়, ফলে ঘড়ি দ্রুত চলে। তাই শীতকালে দোলক ঘড়ির দোলনকাল কমে যায় এবং ঘড়ি দ্রুত সময় প্রদর্শন করে। প্রশ্ন 06: সরল ছন্দিত স্পন্দন বলতে কী বুঝায়?[BB’22] উত্তর: সরল ছন্দিত স্পন্দন হলো একটি বিশেষ ধরনের স্পন্দন গতি, যেখানে কোনো কণার ত্বরণ সরণের সমানুপাতিক এবং বিপরীতমুখী হয়। অর্থাৎ, কণার ত্বরণ $$( a = -kx )$$ সম্পর্ক দ্বারা নির্ধারিত হয়, যেখানে ( x ) হলো কণার সাম্যাবস্থা থেকে সরণ এবং ( k ) হলো বল ধ্রুবক। এই ধরনের গতিতে ত্বরণ সর্বদা সাম্যবিন্দুর দিকে থাকে এবং সরণের বিপরীতমুখী হয়। সুতরাং, সরল ছন্দিত স্পন্দনকে সরল দোলন গতি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। প্রশ্ন 07: একটি স্প্রিংয়ের স্প্রিং ধ্রুবক 2.5 Nm⁻¹ বলতে কী বুঝায়?[JB’22] উত্তর: স্প্রিং ধ্রুবক $$( 2.5 \, \text{Nm}^{-1} )$$ মানে হলো, ঐ স্প্রিংকে ১ মিটার সংকুচিত বা প্রসারিত করতে ২.৫ নিউটন বল প্রয়োগ করতে হয়। স্প্রিং ধ্রুবক ( k ) এর মান স্প্রিংয়ের স্থিতিস্থাপকতার একটি পরিমাপ, যা বল এবং সরণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। প্রশ্ন 08: কম্পনশীল সুরশলাকার বাহুর স্পন্দন একটি সরল ছন্দিত স্পন্দন—ব্যাখ্যা কর।[Din.B’22] উত্তর: সরল ছন্দিত স্পন্দনের শর্ত হলো কণার ত্বরণ সরণের সমানুপাতিক এবং বিপরীতমুখী হতে হবে। সুরশলাকার দুটি বাহুতে আঘাত করলে বাহুগুলো সাম্যাবস্থার চারপাশে কম্পিত হতে থাকে। এই কম্পন চলাকালীন ত্বরণ সর্বদা সরণের বিপরীতমুখী থাকে এবং সরণের সমানুপাতিক হয়। ত্বরণ ও সরণের এই সম্পর্কের কারণে সুরশলাকার বাহুর স্পন্দন সরল ছন্দিত স্পন্দন হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রশ্ন 09: খেলনা গাড়িতে স্প্রিং যুক্ত করার কারণ কী?[MB 22] উত্তর: খেলনা গাড়িতে স্প্রিং যুক্ত করা হয় কারণ স্প্রিং সংকুচিত হয়ে বিভব শক্তি সঞ্চয় করে এবং পরে প্রসারিত হয়ে সেই বিভব শক্তিকে গতিশক্তিতে রূপান্তরিত করে। যখন খেলনাকে টানা হয়, স্প্রিং সংকুচিত হয়ে শক্তি সঞ্চয় করে, এবং যখন ছাড়া হয়, তখন স্প্রিং প্রসারিত হয়ে খেলনাটিকে সামনের দিকে ঠেলে দেয়। প্রশ্ন 10: সরল ছন্দিত গতিসম্পন্ন কোনো কণার বেগ শূন্য হলে উহার ত্বরণ কী শূন্য হবে?[RB’21] উত্তর: সরল ছন্দিত গতির ক্ষেত্রে কণার বেগ যখন শূন্য হয়, তখন তার ত্বরণ সর্বোচ্চ হয়। কণার বেগ $$( v = \omega \sqrt{A^2 – x^2} )$$ , যেখানে ( x = A ) হলে বেগ ( v = 0 )। কিন্তু ত্বরণ $$( a = -\omega^2 x )$$ , অর্থাৎ ( x = A ) হলে ত্বরণ $$( a = -\omega^2 A )$$ , যা সর্বাধিক হয়। সুতরাং, বেগ শূন্য হলেও ত্বরণ শূন্য হয় না বরং সর্বাধিক হয়। প্রশ্ন 11: কালিক পর্যায়বৃত্তি ব্যাখ্যা কর।[RB’21] উত্তর: কোনো রাশি বা ফাংশনের মান যদি নির্দিষ্ট সময় পরপর পুনরাবৃত্তি ঘটে, তাকে কালিক পর্যায়বৃত্তি বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ঘড়ির কাঁটা প্রতি ৬০ সেকেন্ড পর একই স্থানে ফিরে আসে, পৃথিবী প্রতি ৩৬৫ দিনে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে। এই সকল ঘটনা নির্দিষ্ট সময় পরপর পুনরাবৃত্তি ঘটায়, যা কালিক পর্যায়বৃত্তির উদাহরণ। প্রশ্ন 12: সুষম বৃত্তাকার গতি কী সরল ছন্দিত গতি—ব্যাখ্যা কর।[SB’21; Din.B’17] উত্তর: সুষম বৃত্তাকার গতি সরল ছন্দিত গতির শর্ত পূরণ করে, তাই একে সরল ছন্দিত গতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বৃত্তাকার গতিতে কণার অবস্থান, ত্বরণ এবং বেগ একটি নির্দিষ্ট ছন্দে পরিবর্তিত হয়, যা সরল দোলন গতির মতো। সুতরাং, সুষম বৃত্তাকার গতি একটি সরল ছন্দিত গতি। প্রশ্ন 13: গ্রীষ্মকালে দোলক ঘড়ি ধীরে চলে—ব্যাখ্যা কর।[BB’21] উত্তর: গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দোলকের তারের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়। দোলনের সমীকরণ অনুযায়ী, $$( T = 2\pi\sqrt{\frac{L}{g}} )$$ , এখানে ( L ) বৃদ্ধি পেলে দোলনকাল ( T ) বৃদ্ধি পায়। ফলে ঘড়ির প্রতিটি দোলন সম্পন্ন করতে বেশি সময় লাগে, যার কারণে ঘড়িটি ধীরে চলে বা স্লো হয়ে যায়। প্রশ্ন 14: পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সেকেন্ড দোলকের দৈর্ঘ্য কি বিভিন্ন হতে পারে? ব্যাখ্যা কর।[JB’21] উত্তর: সেকেন্ড দোলকের দোলনকাল ( T = 2s )। দোলনকাল $$( T = 2\pi\sqrt{\frac{L}{g}} )$$ সমীকরণ অনুযায়ী, পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ত্বরণ ( g )-এর মান ভিন্ন হতে পারে। ( g )-এর মান ভিন্ন হলে সেকেন্ড দোলকের দৈর্ঘ্য ( L )-এর মানও ভিন্ন হবে। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সেকেন্ড দোলকের দৈর্ঘ্য বিভিন্ন হতে পারে। প্রশ্ন
আদর্শ গ্যাস ও গ্যাসের গতিতত্ত্ব অনুধাবনমূলক ম্যারাথন

পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে এ প্লাস পাওয়ার জন্য গ ঘ প্রশ্নের পাশাপাশি জ্ঞান এবং অনুধাবনামূলক প্রশ্ন ভালো করা খুবই জরুরী । তোমরা অনেকেই আছো যারা ম্যাথ নিয়ে খুবই এক্সপার্ট হয়ে যাও কিন্তু শেষে দেখা যায় যে তুমি ক খ প্রশ্নের উত্তর করতে পারো না। তোমাদের এই ক খ প্রশ্নের উত্তর করাক সহজ করার জন্য আমাদের আজকের এই পোস্টে পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টার আদর্শ গ্যাস ও গ্যাসের গতিতত্ত্ব এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দেওয়া আছে যা বিগত বছরগুলোতে বোর্ড পরীক্ষাতে এসেছে। প্রশ্ন 01: পরম আর্দ্রতা বৃদ্ধির সাথে অণুর গড় বর্গবেগও বৃদ্ধি পায়-ব্যাখ্যা কর।[DB’22; RB’16] উত্তর: জলীয়বাষ্পের ঘনত্ব বায়ুর ঘনত্বের তুলনায় কম। তাই বায়ুর পরম আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেলে, অর্থাৎ বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে, বায়ুর ঘনত্ব হ্রাস পায়।আমরা জানি, গ্যাস অণুর গড় বর্গবেগ $$( c^2 = \frac{3P}{\rho} )$$এই সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, চাপ স্থির থাকলে গ্যাস অণুর গড় বর্গবেগ ঘনত্বের ব্যস্তানুপাতিক। তাই পরম আর্দ্রতা বৃদ্ধির সাথে গ্যাস অণুর গড় বর্গবেগ বৃদ্ধি পায়।[RB’22] প্রশ্ন 02: একই তাপমাত্রায় ঢাকা অপেক্ষা কক্সবাজারে অস্বস্তিকর অনুভূত হয় কেন? উত্তর: কক্সবাজার সমুদ্রতীরবর্তী এলাকা, তাই সেখানে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি। ঢাকার আপেক্ষিক আর্দ্রতা কম, কারণ ঢাকা সমুদ্র থেকে দূরে। আপেক্ষিক আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেলে বাষ্পায়নের হার কমে যায়। ঢাকায় ঘাম দ্রুত শুকিয়ে যায়, ফলে শরীর তাড়াতাড়ি সুপ্ত তাপ গ্রহণ করে এবং শীতল অনুভব হয়। কক্সবাজারে ঘাম শুকাতে সময় বেশি লাগে, তাই অস্বস্তিকর অনুভূত হয়। প্রশ্ন 03: গ্যাসের তাপমাত্রার সাথে ঘনত্বের পরিবর্তন ব্যাখ্যা কর।[Ctg.B’22] উত্তর: গ্যাসের ঘনত্ব তাপমাত্রার ব্যস্তানুপাতিক। তাপমাত্রা বাড়লে গ্যাসের আয়তন বৃদ্ধি পায়, কিন্তু ভর স্থির থাকায় ঘনত্ব কমে যায়। তাই তাপমাত্রা বাড়ালে গ্যাসের ঘনত্ব কমে এবং তাপমাত্রা কমালে ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।[SB’22] প্রশ্ন 04: গ্যাসের গতিতত্ত্ব বয়েলের সূত্রকে সমর্থন করে কি? ব্যাখ্যা কর। উত্তর: হ্যাঁ, গ্যাসের গতিতত্ত্ব বয়েলের সূত্রকে সমর্থন করে। গ্যাসের আদর্শ গতীয় সমীকরণ $$( PV = \frac{mc^2}{3} )$$। এখানে ( mc^2 ) অণুগুলোর গড় গতিশক্তি। বয়েলের সূত্র অনুযায়ী, স্থির তাপমাত্রায় ( PV = ধ্রুবক )। তাই, গ্যাসের গতিতত্ত্ব বয়েলের সূত্র মেনে চলে।[BB’22] প্রশ্ন 05: ঠাণ্ডা পানির জন্য পিতলের কলসী এবং মাটির কলসীর মধ্যে কোনটি বেশি উপযোগী? ব্যাখ্যা কর। উত্তর: ঠাণ্ডা পানির জন্য মাটির কলসী পিতলের কলসীর তুলনায় বেশি উপযোগী। মাটির কলসীতে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে, যা দিয়ে পানি বাষ্পায়নের সময় সুপ্ততাপ শোষণ করে। ফলে মাটির কলসী দীর্ঘ সময় ঠাণ্ডা থাকে। প্রশ্ন 06: আকাশ মেঘলা থাকলে শিশির পড়ে না কেন?[JB’22] উত্তর: আকাশ মেঘলা থাকলে মেঘ তাপরোধী পদার্থ হিসেবে কাজ করে, যা তাপ বিকিরণকে বাধা দেয়। এর ফলে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং জলীয়বাষ্পের ধারণক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। তাই শিশির জমে না। প্রশ্ন 07: পরমশূন্য তাপমাত্রায় গ্যাসের গতিশক্তি শূন্য হয়-ব্যাখ্যা কর।[CB’22] উত্তর: গ্যাসের অণুগুলোর গড় গতিশক্তি তাপমাত্রার সমানুপাতিক। গড় গতিশক্তি কমে গেলে তাপমাত্রা কমে এবং পরমশূন্য তাপমাত্রায় অণুর গতিশক্তি শূন্য হয়ে যায়। প্রশ্ন 08: বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে গেলে বায়ুমণ্ডলীয় চাপের কীরূপ পরিবর্তন হয়? ব্যাখ্যা কর।[Din.B’22] উত্তর: বায়ুতে জলীয়বাষ্প বৃদ্ধি পেলে বায়ুর ঘনত্ব কমে যায়, কারণ জলীয়বাষ্প শুষ্ক বায়ুর তুলনায় হালকা। $$( P = \rho R T )$$ সূত্র অনুযায়ী, তাপমাত্রা স্থির থাকলে ঘনত্বের সাথে বায়ুমণ্ডলীয় চাপও কমে যায়। প্রশ্ন 09: আবদ্ধ স্থানে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে শিশিরাঙ্ক কমে না বাড়ে? ব্যাখ্যা কর।[DB’ 21] উত্তর: আবদ্ধ স্থানে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে শিশিরাঙ্কের কোনো পরিবর্তন হয় না, তা অপরিবর্তিত থাকে। কারণ শিশিরাঙ্ক হলো সেই তাপমাত্রা, যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ু তার মধ্যে থাকা জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়। যেহেতু স্থানটি আবদ্ধ এবং জলীয়বাষ্পের ভরের পরিবর্তন হয় না, তাই শিশিরাঙ্কও অপরিবর্তিত থাকে। প্রশ্ন 10: গ্যাসের বেগ নির্ণয়ে rms বেগ নেওয়া হয় কেন? ব্যাখ্যা কর। উত্তর: গ্যাসের অণুগুলির বেগ বিভিন্ন দিকে চলে, ফলে গড়বেগ শূন্য হতে পারে। কিন্তু বেগের বর্গমূল-মাধ্যম বেগ (rms বেগ) শূন্য হয় না এবং এটি গ্যাস অণুর গতিশক্তির সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। তাই গ্যাসের বেগ নির্ণয়ে rms বেগ নেওয়া হয়, যা অণুগুলির গতিশক্তির যথাযথ মান প্রদান করে। প্রশ্ন 11: “কোনো স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা 60%”-এর অর্থ কী?[RB’ 21; Ctg.B’21; BB’21; DB’16] উত্তর: “কোনো স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা 60%” বোঝায় যে:(i) ঐ তাপমাত্রায় বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প প্রয়োজন, তার 60% জলীয়বাষ্প বায়ুতে উপস্থিত আছে।(ii) ঐ তাপমাত্রায় উপস্থিত জলীয়বাষ্পের চাপ, সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্প চাপের 60%।(iii) শিশিরাঙ্কে জলীয়বাষ্প চাপও বায়ুর তাপমাত্রায় সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্প চাপের 60%। প্রশ্ন 12: “আদর্শ গ্যাস একটি কল্পনামাত্র”-ব্যাখ্যা কর।[RB’ 21] উত্তর: “আদর্শ গ্যাস একটি কল্পনামাত্র”-এই উক্তি সঠিক। আদর্শ গ্যাস সমীকরণ প্রতিপাদনের সময় গ্যাসের অণুগুলিকে বিন্দুভর হিসেবে ধরা হয় এবং তাদের আকর্ষণ বল বিবেচনা করা হয় না। কিন্তু বাস্তবে গ্যাস অণুগুলির নির্দিষ্ট আয়তন থাকে এবং তাদের মধ্যে আকর্ষণ বলও ক্রিয়াশীল থাকে। তাই আদর্শ গ্যাস একটি কল্পনামাত্র। প্রশ্ন 13: গ্রীষ্মকালে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ অধিক হলেও শিশির পড়ে না কেন?[Ctg.B 21] উত্তর: গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা শিশিরাঙ্কের চেয়ে বেশি থাকে, ফলে শিশির পড়ে না। যদিও বায়ুতে বেশি জলীয়বাষ্প থাকে, তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় বায়ু অসম্পৃক্ত থাকে এবং জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির জমে না। প্রশ্ন 14: এক মোল গ্যাসের ক্ষেত্রে গ্যাস ধ্রুবককে সর্বজনীন বলা হয় কেন?[SB’ 21] উত্তর: এক মোল গ্যাসের তাপমাত্রা 1K বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ কাজ করতে হয়, তাকে মোলার গ্যাস ধ্রুবক বলা হয়। এর মান 8.314 Jmol⁻¹K⁻¹। যেকোনো গ্যাসের ক্ষেত্রে 1 মোল পরিমাণের তাপমাত্রা 1K বাড়াতে একই পরিমাণ কাজ করতে হয়। এজন্য গ্যাস ধ্রুবককে সর্বজনীন বলা হয়। প্রশ্ন 15: মোলার গ্যাস ধ্রুবক 8.31 Jmol⁻¹K⁻¹ বলতে কী বোঝায়?[BB’ 21] উত্তর: মোলার গ্যাস ধ্রুবক 8.31 Jmol⁻¹K⁻¹ বলতে বোঝায় যে, 1 মোল আদর্শ গ্যাসের তাপমাত্রা 1K বাড়াতে যে কাজ করতে হয়, তা 8.31 J। প্রশ্ন 16: কোনো একদিনের শিশিরাঙ্ক 19.4°C বলতে কী বোঝায়?[JB’ 21; DB’19] উত্তর: শিশিরাঙ্ক 19.4°C বলতে বোঝায়, 19.4°C তাপমাত্রায় ঐ স্থানের বায়ু তার মধ্যে থাকা জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়। অর্থাৎ, এই তাপমাত্রায় শিশির জমা বা অদৃশ্য হতে শুরু করে। প্রশ্ন 17: শীতের সকালে শিশির দেখা যায় কেন?[CB’ 21] উত্তর: শীতের রাতে ভূপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয়ে যায় এবং তাপমাত্রা শিশিরাঙ্কের নিচে নেমে আসে। ফলে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির জমা শুরু করে। তাই শীতের সকালে শিশির দেখা যায়। প্রশ্ন 18: মেঘলা রাত অপেক্ষা মেঘহীন রাতে বেশি শিশির জমে কেন?[Din.B’ 21] উত্তর: মেঘহীন রাতে ভূ-পৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে এবং ঠাণ্ডা হয়ে যায়, যার ফলে তাপমাত্রা শিশিরাঙ্কে পৌঁছায়। তখন বাতাসে থাকা জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির জমে। কিন্তু মেঘলা রাতে মেঘ তাপ বিকিরণ বাধা দেয়, ফলে ভূ-পৃষ্ঠ ঠাণ্ডা হতে পারে না এবং তাপমাত্রা শিশিরাঙ্কের নিচে নামে না। এজন্য মেঘলা রাতের তুলনায় মেঘহীন রাতে বেশি শিশির জমে। প্রশ্ন 19: চার্লসের সূত্রের আলোকে পরমশূন্য তাপমাত্রা ব্যাখ্যা কর।[MB’ 21] উত্তর: চার্লসের সূত্র অনুসারে, স্থির চাপে নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের আয়তন প্রতি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে পরিবর্তিত হয়। সূত্রটি থেকে জানা যায় যে, গ্যাসের আয়তন তাপমাত্রা -273°C (বা 0
এইচএসসি নিউটনীয় বলবিদ্যা অনুধাবনমূলক ম্যারাথন

01. নরম মাটিতে লাফ দিলে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা কম – ব্যাখ্যা কর। [DB’22] উত্তর:কোনো ব্যক্তি নরম মাটিতে লাফ দিলে, মাটি তার উপর একটি প্রতিক্রিয়া বল প্রয়োগ করে। যেহেতু নরম মাটির দৃঢ়তা কম, তাই প্রতিক্রিয়া বলের মান কম হয় এবং বলের ক্রিয়াকাল বেশি হয়। এর ফলে, ব্যক্তির শরীরে যে ধাক্কা লাগে তা কম শক্তিশালী হয়, যার ফলে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। [DB’22]02. কৌণিক ভরবেগের দিক কীভাবে পাওয়া যায়- ব্যাখ্যা কর। উত্তর:ঘূর্ণন অক্ষ সাপেক্ষে কোনো বস্তুর জড়তার ভ্রামক এবং কৌণিক বেগের গুণফলকে কৌণিক ভরবেগ বলা হয়। আমরা জানি, কৌণিক ভরবেগ,$$ L = r \times p $$ এখানে, কৌণিক ভরবেগের দিক সেই তলের লম্ব বরাবর হয়, যেই তলে r (অবস্থান ভেক্টর) এবং p (ভরবেগ ভেক্টর) অবস্থিত। ক্রস গুণনের নিয়ম দ্বারা কৌণিক ভরবেগের দিক পাওয়া যায়। 03. দরজার হাতল মাঝে না রেখে প্রান্তে রাখা হয় কেন? [RB’22] উত্তর:কোনো দরজা কত সহজে খোলা যাবে তা নির্ভর করে প্রযুক্ত টর্কের উপর। টর্কের সূত্র অনুযায়ী, $$\tau = F \times r$$ যেখানে ( F ) হলো প্রয়োগ করা বল এবং ( r ) হলো বলের প্রয়োগ বিন্দু থেকে ঘূর্ণন অক্ষের দূরত্ব। নির্দিষ্ট কোণে বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে, ঘূর্ণন অক্ষ থেকে বলের প্রয়োগ বিন্দুর দূরত্ব যত বেশি হবে, টর্কের পরিমাণ তত বেশি হবে। তাই দরজার হাতল মাঝে না রেখে প্রান্তে রাখা হয়, যাতে কম বল প্রয়োগেই দরজাটি সহজে খোলা যায়। 04. ঘূর্ণনরত পৃথিবী সূর্য হতে দূরে সরে গেলে এর বেগ কমে যায় কেন? ব্যাখ্যা কর। [Ctg.B’22] উত্তর:পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণনরত অবস্থায় থাকে, এবং এর কৌণিক ভরবেগ সবসময় সংরক্ষিত থাকে। কৌণিক ভরবেগের সূত্র অনুসারে, ( L = mvr ), যেখানে ( L ) হলো কৌণিক ভরবেগ, ( m ) হলো পৃথিবীর ভর, ( v ) হলো এর গতি, এবং ( r ) হলো সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব। যখন পৃথিবী সূর্য থেকে দূরে সরে যায়, তখন ( r ) বৃদ্ধি পায়। যেহেতু কৌণিক ভরবেগ ( L ) সংরক্ষিত থাকে, ( r ) বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ( v ) অর্থাৎ পৃথিবীর বেগ কমে যায়। সুতরাং, পৃথিবী সূর্য থেকে যত দূরে সরে যায়, এর বার্ষিক গতি তত কমে যায়। 05. রাস্তার বাঁকে সাইকেল আরোহীকে ভেতরের দিকে হেলে বাঁক নিতে হয় কেন? ব্যাখ্যা কর। [Ctg.B’22] উত্তর:রাস্তার বাঁকে সাইকেল আরোহীকে কেন্দ্রবিমুখী বলের কারণে যাতে ছিটকে না যায়, সেজন্য তাকে ভেতরের দিকে হেলে সাইকেল চালাতে হয়। আরোহীর এই হেলানোর ফলে, তার ওজনের উপাংশ ( $$mg \sin \theta$$ ) ভিতরের দিকে কাজ করে এবং কেন্দ্রবিমুখী বলকে প্রশমিত করে। ফলে সাইকেলটি স্থিতিশীলভাবে বাঁক নিতে পারে। 06. যে মৌলিক বল ঘর্ষণ বল সৃষ্টি করে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। [BB’22] উত্তর:ঘর্ষণ বল সৃষ্টির জন্য দায়ী মৌলিক বল হলো তাড়িতচৌম্বক বল। দুটি আহিত কণা তাদের আধানের কারণে একে অপরের ওপর যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল প্রয়োগ করে তাকে তাড়িতচৌম্বক বল বলে। তড়িৎ প্রভাব ও চৌম্বক প্রভাব অবিচ্ছেদ্য হওয়ায় এই বলকে তাড়িতচৌম্বক বল নামে ডাকা হয়। মহাকর্ষ বলের মতোই তাড়িতচৌম্বক বলের পাল্লা অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত, এবং এ বলের ক্রিয়ার জন্য কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না। 07. সমবেগে উঠানামা করা লিফটের যাত্রীর ওজনের পরিবর্তন হয় না কেন? ব্যাখ্যা কর। [JB’22] উত্তর:সমবেগে চলমান লিফটের যাত্রীর ওজনের কোনো পরিবর্তন হয় না কারণ তখন লিফটে কোনো ত্বরণ থাকে না। ফলে, পৃথিবীর অভিকর্ষজ ত্বরণ এর সাথে কোনো লব্ধি তৈরি হয় না। যাত্রীর ওজন ( W = m(g \pm a) ) সূত্র অনুযায়ী, যেহেতু ( a = 0 ) (লিফট সমবেগে চললে), তাই ( $$W = mg$$ ), অর্থাৎ যাত্রীর ওজন অপরিবর্তিত থাকে। 08. রাস্তার ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর। [CB’22] উত্তর:বাঁকা পথে গাড়ি চলার সময় এর জড়তার কারণে গাড়ি উল্টে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই জড়তা প্রতিহত করার জন্য গাড়িকে একটি কেন্দ্রমুখী বলের সৃষ্টি করতে হয়, যা গাড়ির বাঁক নেওয়ার সময় প্রয়োজন। যদি সমতল রাস্তায় গাড়ি কাত হয়, তবে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থাকে। এজন্য, রাস্তার বাঁকের ভিতরের প্রান্ত থেকে বাইরের প্রান্ত কিছুটা উঁচু করা হয়, যা ব্যাংকিং নামে পরিচিত। এটি গাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় কেন্দ্রমুখী বলের সৃষ্টি করে, যাতে গাড়িটি নিরাপদে বাঁক নিতে পারে। 09. পৃথিবী নিজ অক্ষের সাপেক্ষে সমদ্রুতিতে আবর্তনরত হলেও সূর্যের চারপাশে নয় – ব্যাখ্যা কর। [CB’22] উত্তর:পৃথিবী নিজ অক্ষের সাপেক্ষে সমদ্রুতিতে আবর্তনরত হলেও সূর্যের চারপাশে তা নয়, কারণ পৃথিবীর কক্ষপথ উপবৃত্তাকার। এই কারণে, সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সর্বদা সমান থাকে না। তবে, পৃথিবীর কৌণিক ভরবেগ সবসময় সংরক্ষিত থাকে। ফলে, কৌণিক ভরবেগ ধ্রুবক রাখতে পৃথিবীর কৌণিক বেগ দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়। এজন্য, সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর গতি সমান থাকে না। 10. ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বল পরস্পরকে প্রশমিত করে না – ব্যাখ্যা কর। [Din.B’22] উত্তর:ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বলের মান সমান এবং দিক বিপরীত হলেও তারা একে অপরকে নিষ্ক্রিয় করে না। নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুসারে, ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সবসময় ভিন্ন ভিন্ন বস্তুর উপর কাজ করে। ফলে কোনো বস্তুর উপর নিট বল শূন্য হয় না এবং বল নিষ্ক্রিয় হয় না। 11. কোথায় বল প্রয়োগে দরজা দ্রুত খুলবে – ব্যাখ্যা কর। [MB’22] উত্তর:কোনো দরজার উপর প্রযুক্ত বল ভিন্ন মানের কৌণিক ত্বরণ সৃষ্টি করতে পারে, যা নির্ভর করে বল কোথায় এবং কোন দিকে প্রয়োগ করা হয়েছে তার উপর। যদি দরজার কবজার উপর সরাসরি বল প্রয়োগ করা হয়, তাহলে কোনো কৌণিক ত্বরণ সৃষ্টি হবে না। তবে, একই মানের বল যদি দরজার বাইরের প্রান্তে দরজার সাথে লম্বভাবে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে সর্বোচ্চ কৌণিক ত্বরণ সৃষ্টি হবে। সুতরাং, দরজা দ্রুত খোলার জন্য বল দরজার প্রান্তে এবং দরজার সাথে লম্বভাবে প্রয়োগ করা উচিত। এর ফলে ঘূর্ণন অক্ষ থেকে বলের প্রয়োগ বিন্দুর দূরত্ব বেশি হবে, যা দরজা দ্রুত খোলার প্রক্রিয়াকে সহজতর করে। 12. ব্যালে ড্যান্সের ক্ষেত্রে কৌণিক ভরবেগের প্রভাব ব্যাখ্যা কর। [MB’22] উত্তর:ব্যালে ড্যান্সের ক্ষেত্রে ব্যালেরিনার শরীরের অঙ্গভঙ্গির পরিবর্তন এমনভাবে ঘটে যে, তার জড়তার ভ্রামক ও কৌণিক বেগের পরিবর্তন হয়। যেহেতু বাইরে থেকে কোনো বল বা টর্ক প্রযুক্ত করা হয় না, তাই তার কৌণিক ভরবেগ ধ্রুব থাকে। অর্থাৎ, ব্যালেরিনার জড়তার ভ্রামক ও কৌণিক বেগের গুণফল সবসময় একই থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যালেরিনা যখন হাত-পা গুটিয়ে নেয়, তখন তার জড়তার ভ্রামক কমে এবং কৌণিক বেগ বেড়ে যায়, ফলে সে দ্রুত ঘুরতে থাকে। আবার, হাত-পা প্রসারিত করলে জড়তার ভ্রামক বেড়ে যায় এবং কৌণিক বেগ কমে যায়, ফলে তার ঘূর্ণন গতিও কমে যায়। 13. ঘূর্ণনক্ষম কোনো বস্তুর জড়তার ভ্রামক বেশি হলে কী হয়? ব্যাখ্যা কর। [DB’21] উত্তর:ঘূর্ণনক্ষম কোনো বস্তুর জড়তার ভ্রামক বেশি হলে বস্তুটির কৌণিক ভরবেগ এবং ঘূর্ণন গতিশক্তি বেশি হয়। এর ফলে ঘূর্ণনক্ষম বস্তুকে থামাতে বা ত্বরণ/মন্দন ঘটাতে বেশি পরিমাণ বলের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ, জড়তার ভ্রামক বেশি হলে বস্তুর ঘূর্ণন অবস্থা পরিবর্তন করা কঠিন হয়ে যায়, কারণ এতে কৌণিক ভরবেগ
এইচএসসি ভেক্টর অনুধাবনমূলক ম্যারাথন

পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে এ প্লাস পাওয়ার জন্য গ ঘ প্রশ্নের পাশাপাশি জ্ঞান এবং অনুধাবনামূলক প্রশ্ন ভালো করা খুবই জরুরী । তোমরা অনেকেই আছো যারা ম্যাথ নিয়ে খুবই এক্সপার্ট হয়ে যাও কিন্তু শেষে দেখা যায় যে তুমি ক খ প্রশ্নের উত্তর করতে পারো না। তোমাদের এই ক খ প্রশ্নের উত্তর করাক সহজ করার জন্য আমাদের আজকের এই পোস্টে পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টার ভেক্টরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দেওয়া আছে যা বিগত বছরগুলোতে বোর্ড পরীক্ষাতে এসেছে। ভেক্টর অপারেটর স্কেলার রাশিকে ভেক্টর রাশিতে রূপান্তর করে-ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ কোনো স্কেলার রাশির উপর ভেক্টর অপারেটর (ডেল অপারেটর, ট) ব্যবহার করলে একটি ভেক্টর রাশি পাওয়া যায়। এটিকে স্কেলার রাশির গ্রেডিয়েন্ট বলা হয়। এই ভেক্টর রাশিটি একটি নির্দিষ্ট ভেক্টর ক্ষেত্রে স্কেলার রাশিটির পরিবর্তনের হার নির্দেশ করে। এ স্কেলার রাশিটির ভেক্টর রূপ নয়, বরং ভেক্টর ক্ষেত্রে স্কেলার রাশিটির পরিবর্তনের হার নির্দেশক ভেক্টর রাশি। এভাবেই ভেক্টর অপারেটর স্কেলার রাশিকে ভেক্টর রাশিতে রূপান্তর করে। ট্রলি বেগের হাতল লম্বা রাখার সুবিধা কী? উত্তরঃ ট্রলি ব্যাগের হাতল যত লম্বা হবে হাতল ও ভূমির মধ্যবর্তী কোণ তত কমবে।এতে অনুভূমিক উপাংশের মান বাড়বে আর উলম্ব উপাংশ কমবে।হাতল যত লম্বা ও তত কম। অর্থাৎ, cosθ তত বড় হবে আর Fcosθ এর মান বাড়বে। Fcosθ এর মান অর্থাৎ, অনুভূমিক উপাংশ বাড়লে ট্রলি ব্যাগ টানা সহজতর হবে। তিনটি ভেক্টরের লব্ধি কখন শূন্য হয়? উত্তরঃ তিনটি ভেক্টরের লব্ধি শূন্য হয় যখন কোনো ত্রিভুজের তিনটি বাহু একইক্রমে তিনটি ভেক্টর নির্দেশ করে। পাশের চিত্রে ত্রিভুজ ABC এর লব্ধি হবে, AB+BC+ СА = 0 নাল ভেক্টরের দিক ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ যে ভেক্টরের মান শূন্য তাকে নাল ভেক্টর বা শূন্য ভেক্টর বলে। একটি ভেক্টরের সাথে তার বিপরীত ভেক্টর যোগ করে বা দুটি সমান ভেক্টর বিয়োগ করে নাল ভেক্টর পাওয়া যায়। নাল ভেক্টরের পাদবিন্দু ও শীর্ষবিন্দু একই বিন্দুতে হয়। তাই নাল ভেক্টরের কোনো সুনির্দিষ্ট দিক নেই। নাল ভেক্টরকে সাধারণত 0 দিয়ে প্রকাশ করা হয়। নৌকার গুণ টানার সময় দড়ি যত লম্বা হয় নৌকা তত দ্রুত চলে কেন? ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃঅত্তর গুণের দড়ি যত লম্বা হবে তা তত কম উৎপন্ন করবে অনুভূমিকের সাথে অর্থাৎ দড়ি ভূমির কাছাকাছি থাকবে। θ এর মান কম হলে cosθ এর মান বেশি হবে। অনুভূমিক উপাংশ Fcosθ ও বেশি হবে। এতে নৌকা সহজে টেনে নেওয়া যাবে। দুটি অসমান ভেক্টরের লব্ধি শূন্য হতে পারে না কেন? ব্যাখ্যা কর। উত্তর দুটি অসমান সমজাতীয় ভেক্টরের লব্ধির সর্বনিম্ন মান ভেক্টরদ্বয়ের বিয়োগফলের সমান। এক্ষেত্রে ভেক্টরদ্বয় সমান না হওয়ায় এদের লব্ধি কখনোই শূন্য হতে পারবে না। অবস্থান ভেক্টর একটি সীমাবদ্ধ ভেক্টর ব্যাখ্যা কর। উত্তর প্রসঙ্গ কাঠামোর মূল বিন্দুর সাপেক্ষে কোনো বিন্দুর অবস্থান যে ভেক্টরের সাহায্যে নির্ণয় বা নির্দেশ করা হয় তাকে বলে অবস্থান ভেক্টর। সীমাবদ্ধ ভেক্টরের পাদবিন্দু নির্দিষ্ট থাকে। ফলে পাদবিন্দুর অবস্থান পরিবর্তন করা যায় না। অবস্থান ভেক্টরের ক্ষেত্রেও পাদবিন্দু প্রসঙ্গ কাঠামোর মূলবিন্দুতে নির্দিষ্ট থাকে। তাই অবস্থান ভেক্টর একটি সীমাবদ্ধ ভেক্টর। দুইয়ের অধিক ভেক্টর রাশির যোগের নিয়ম ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ দুইয়ের অধিক একজাতীয় ভেক্টরের লব্ধি নির্ণয়ে বহুভুজ সূত্র ব্যবহৃত হয়। একই জাতীয় দুই এর অধিক ভেক্টর রাশির যোজনের ক্ষেত্রে ভেক্টরগুলোর একটির শীর্ষবিন্দুর উপর অপরটির পাদবিন্দু রেখে একইক্রমে সাজিয়ে প্রথম ভেক্টরের পাদবিন্দু থেকে শেষ ভেক্টরের শীর্ষবিন্দু যোগ করলে যে বহুভুজ পাওয়া যায় তার শেষ বাহুটি বিপরীতক্রমে ভেক্টরগুলোর লব্ধির মান ও দিক নির্দেশ করে। ঘর্ষণ বল কি অসংরক্ষণশীল বল? ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ হ্যাঁ, ঘর্ষণ বল একটি অসংরক্ষণশীল বল। এক্ষেত্রে কোনো এক বিন্দু হতে যাত্রা শুরু করে যে কোনো পথে আবার ঐ বিন্দুতে ফিরে এলে কৃতকাজ শূন্য হয় না। ঘর্ষণ বল দ্বারা কাজ আদি ও চূড়ান্ত বিন্দুর উপর নির্ভর করে না, গতিপথের উপর নির্ভর করে। পূর্ণচক্রে মোট কাজ শূন্য হয় না এবং যান্ত্রিক শক্তির নিত্যতার সূত্রও প্রযোজ্য হয় না। ঘর্ষণ বল দ্বারা কৃতকাজ পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। এসব অসংরক্ষণশীল বলের বৈশিষ্ট্য হওয়ায় ঘর্ষণ বল একটি অসংরক্ষণশীল বল। লন রোলার ঠেলা অপেক্ষা টানা সহজ কেন? ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ রোলারের ওজন W ও হাতলের ওপর প্রযুক্ত বল হলে টবল রোলারের বিন্দুতে অনুভূমিকের সাথে ও কোণ ক্রিয়াশীল। ভেক্টরের ডাইভারজেন্সের বৈশিষ্ট্য কী কী? উত্তরঃ ভেক্টর ডাইভারজেন্স একটি স্কেলার ক্ষেত্র যা দ্বারা ভেক্টরক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে ফ্লাক্সের প্রকৃতি (বহিঃ/অন্তঃ) জানা যায়। ভেক্টর ডাইভারজেন্সের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ: নৌকার গুণ টানার ক্ষেত্রে বৈঠার প্রয়োজনীয়তা কী? ব্যাখ্যা কর উত্তরঃ নৌকাকে F বলে টানা হলে এর উপাংশ Fcosθ নৌকাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়, আর Fsinθ উপাংশ নৌকাকে পাড়ের দিকে টানে। এ F sinθ কে প্রতিহত করতে বৈঠা প্রয়োজন হয়। বৈঠা দিয়ে পাড় বরাবর উপাংশ প্রশমিত করে নৌকা সামনের দিকে এগিয়ে যায়। “আয়ত একক ভেক্টরের দিক নির্দিষ্ট হলেও একক ভেক্টরের দিক নির্দিষ্ট নয়”-ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ যে ভেক্টর রাশির মান এক একক, তা একক ভেক্টর। কোনো ভেক্টরকে তার মান দিয়ে ভাগ করলে একক ভেক্টর পাওয়া যায় এবং সেই একক ভেক্টরের দিক হয় ঐ ভেক্টরের দিকে বা তার সমান্তরালে। কিন্তু ত্রিমাত্রিক স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় তিনটি ধনাত্মক অক্ষ বরাবর যে তিনটি একক ভেক্টর বিবেচনা করা হয়, তাদেরকে আয়ত একক ভেক্টর বলে। এই স্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় x-অক্ষের ধনাত্মক দিক বরাবর একক ভেক্টর 1, y-অক্ষের ধনাত্মক দিক বরাবর একক ভেক্টর ও z-অক্ষের ধনাত্মক দিক বরাবর একক ভেক্টর f.i.j. k হল আয়ত একক ভেক্টর। এরা একক ভেক্টর হলেও দিকস্থানাঙ্ক ব্যবস্থায় অক্ষত্রয়ের দিকে। অন্যদিকে, একক ভেক্টরের দিক যেকোনো দিকে হতে পারে, তা নির্দিষ্ট নয়। কোনো ভেক্টরের বিপরীত ভেক্টর এবং বিপ্রতীপ ভেক্টরের মধ্যবর্তী কোণ সর্বদা একই হয়”-ব্যাখ্যা কর উত্তরঃ দুটি ভেক্টরের পরমমান সমান কিন্তু অভিমুখ বিপরীত হলে তাদেরকে বিপরীত ভেক্টর বলে। যেমন: P ও পরস্পর বিপরীত ভেক্টর। অন্যদিকে, দুটি সমান্তরাল ভেক্টরের একটির মান অপরটির বিপ্রতীপ হলে তাদেরকে বিপ্রতীপ ভেক্টর বলে। যেমন: 5i ও পরস্পর বিপ্রতীপ ভেক্টর। দেখা যায়, বিপরীত ভেক্টরের দিক মূল ভেক্টরের বিপরীত দিকে কিন্তু বিপ্রতীপ ভেক্টরের দিক মূল ভেক্টরের একই দিকে। অর্থাৎ, কোনো ভেক্টরের বিপরীত ভেক্টর ও বিপ্রতীপ ভেক্টর এর দিক সর্বদা বিপরীত দিকে। তথা মধ্যবর্তী কোণ সর্বদা 180° হয়। সমান ভেক্টর, সমান্তরাল ভেক্টর কিনা? ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ দুটি ভেক্টর সমান হলে তাদের ধারকরেখা একই অথবা সমান্তরাল হয়। দুটি সমান ভেক্টরের আদি ও পাদ বিন্দু অভিন্ন হলে এদের ধারকরেখা একই। অন্যথায়, দুটি সমান ভেক্টরের আদি ও পাদবিন্দু ভিন্ন কিন্তু সমান ভেক্টরের মান ও দিক একই হওয়ায় এদের ধারকরেখা সমান্তরাল হয়। এক্ষেত্রে, সমান ভেক্টর দুটি সমান্তরাল ভেক্টরও হয়। i ও j এর মধ্যবর্তী কোণ 90° এর চেয়ে কম হওয়া সম্ভব নয়-ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ i হচ্ছে -অক্ষ বরাবর একক ভেক্টর। j হচ্ছে y-অক্ষ বরাবর একক ভেক্টর। x-অক্ষ এবং y-অক্ষ এর মধ্যবর্তী কোণ 90°। তাই। এবং এর মধ্যবর্তী কোণ 90° এর কম হওয়া সম্ভব নয়। দুটি ভেক্টরের ভেক্টর গুণন বিনিময় সূত্র মেনে চলে না-ব্যাখ্যা কর। উত্তরঃ দুটি ভেক্টরের ভেক্টর গুণন বিনিময় সূত্র মানে